মেহেরপুর জেলায় আওয়ামী লীগের ‘ট্রেইনার’ প্রশিক্ষণ: ১৭ তারিখ মঙ্গলবার, মেহেরপুর জেলায় একটি কমিউনিটি হলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর ‘ট্রেইনার’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সারাদেশে মাঠ-পর্যায়ে নানা কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছে। গতানুগতিক ধারার নির্বাচন-মুখি কর্মসূচি ছাড়াও এবার থাকছে নতুন কিছু উদ্যোগ। উদ্যোগগুলোর সমন্বিত কর্মসূচির নাম “রোড টু স্মার্ট বাংলাদেশ“।
বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, বিগত সময়ের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবারও প্রিন্ট মাধ্যম, অনলাইন মাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া, ইভেন্ট-ভিত্তিক প্রক্রিয়ায় প্রচার চালাবে। তবে এবার প্রচারের পাশাপাশি তারা ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে আনার জন্য তারা স্বাতন্ত্র্য উদ্যোগ নিয়েছে। সেই উদ্যোগটিকে তারা আভ্যন্তরীণ নাম দিয়েছে “অফলাইন ক্যাম্পেইন” যা মূলত প্রতিজন ভোটারের মুখোমুখি হয়ে প্রচার করা এবং তাদেরকে ভোট কেন্দ্রে আনার একটি কার্যক্রম।
মেহেরপুর জেলায় আওয়ামী লীগের ‘ট্রেইনার’ প্রশিক্ষণ
“অফলাইন ক্যাম্পেইন” এর আওতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতি মহল্লায় ২০০ জন ভোটারের জন্য একজন “ভোট প্রার্থনা কর্মী” বা “ক্যাম্পেইনর” মনোনীত করছে, যার দেশব্যাপী মোট সংখ্যা ৬ লক্ষ। এই কর্মীদের তারা নিয়মিত প্রশিক্ষণের মধ্যে রাখতে তৈরি করছে “প্রশিক্ষক”। প্রতি ২০০ জন ক্যাম্পেইনর এর জন্য মনোনীত করা হচ্ছে ১ জন প্রশিক্ষক। এই প্রশিক্ষকরাও জেলা পর্যায়ে স্থানীয়। সেসব স্থানীয় প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষনকৌল শিখিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সজ্জিত করতে তৈরি করা হয়েছে একটি ৩০০ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের “মাস্টার ট্রেইনর” পুল।
জেলার নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে ওয়ার্ড পর্যায় থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে “ভোট প্রার্থনা কর্মী” বা “ক্যাম্পেইনর” তালিকা। উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে “প্রশিক্ষক” তালিকা। প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে “মাস্টার ট্রেইনর” পুল এর শিক্ষকরা। আবার এসব প্রশিক্ষকরা যখন যখন ভোট প্রার্থনা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, তখন মেন্টর হিসেবে উপস্থিত থাকছেন “মাস্টার ট্রেইনর” পুলের একজন শিক্ষক।
এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে মেহেরপুর জেলায় আওয়ামী লীগের ‘ট্রেইনার’ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবির বিন আনোয়ার। তিনি বলেন – আমরা এবার প্রতিজন ভোটারের কাছে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন এবং দেশের মানুষের জন্য তার ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা তুলে ধরে ভোট চাইবো। প্রতিজন ভোটারের বাড়িতে যাবে আমাদের একজন ক্যাম্পেইনর। ক্যাম্পেইনর দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন ও জননেত্রী শেখ হাসিনার বার্তা তুলে ধরার পাশাপাশি ভোটারের সকল প্রশ্নের উত্তর দেবে। আমরা বিশ্বাস রাখি ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসবেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন – মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন দোদুল এমপি, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক সহ জেলা আওয়ামী লীগ এর নেতৃবৃন্দ। আরও উপস্থিত ছিলেন সকল উপজেলা, পৌর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ জানান “আমরা দলের এই উদ্যোগটিতে খুবই উৎসাহ বোধ করছি। আমরা এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনার বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাদের ভোটকেন্দ্রে আসতে উৎসাহী করতে পারবো। বঙ্গবন্ধু কন্যা এত কাজ করেছেন মানুষের জন্য, সেটা তুলে ধরলে নিশ্চয় মানুষ পুনরায় নৌকা মার্কাকেই বেছে নেবেন।
অনুষ্ঠানে ক্যাম্পেইনের কর্মকৌশল বর্ণনা করেন ক্যাম্পেইনের ফোকাল পয়েন্ট তথ্য প্রযুক্তিবিদ “সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর”। তিনি বলেন “ক্যাম্পেইনের হাজারো নতুন ফর্মুলা আবিষ্কার হয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত ভোটারের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়ার কোন ভালো বিকল্প তৈরি হয়নি। ভোটারের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়া আজও সবচেয়ে কার্যকর টুল। আমরা সেই টুলটিকে আরও সুসংগঠিত ভাবে প্রযুক্তির সহায়তায় কাজে লাগাতে কাজ করছি”
উদ্বোধনী পর্ব শেষে প্রশিক্ষণ কর্মশালার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন ক্যাম্পেইনের সহকারী ফোকাল পয়েন্ট সৈয়দ ইমাম বাকের। তিনি বলেন “সংসদ নির্বাচনকে আমরা স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের মতো আন্তরিক, আকর্ষক ও উৎসবমুখর করতে চাই। এই প্রশিক্ষণের পরে আমাদের প্রতিজন ভোট প্রার্থনা কর্মী সেই লক্ষেই কাজ করবেন। তার সাথে কর্মশালাটি পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষকবৃন্দ।
আরও পড়ুনঃ