বাজার এখন মেহেরপুরের আঁটি লিচুর দখলে

বাজার এখন মেহেরপুরের আঁটি লিচুর দখলে,বাজারে উঠতে শুরু করেছে মেহেরপুরের রসাল সুমিষ্ট লিচু। মৌসুমের শুরুতে আঁটি লিচুর দখলে বাজার। ঝুড়িভর্তি লিচু বাগান থেকে সংগ্রহ করে বিক্রেতা নিয়ে চলেছেন শহরের মোড়ে মোড়ে। রসাল এই লিচুর খ্যাতিও রয়েছে বেশ। এ জেলায় নানা জাতের লিচু পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীরা জেলার লিচুবাগানগুলো থেকে এসব লিচু কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন।

 

বাজার এখন মেহেরপুরের আঁটি লিচুর দখলে

 

 

বাজার এখন মেহেরপুরের আঁটি লিচুর দখলে

গত এক সপ্তাহ ধরে সরেজমিনে দেখা যায়, পাইকারি বাজার ছাড়াও শহরের হোটেল বাজার, হাসপাতাল মোড়, বড় বাজার মোড়ে লিচু বিক্রি চলছে। ১০০টি লিচুর খুচরা মূল্য ১৪০ টাকা। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে লিচুর দাম কম। এতে অবশ্য হতাশ বাগানমালিকেরা। গত বছরে ৮০টি লিচু দাম ২০০ টাকা ছিল।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, প্রথম দিকে মেহেরপুরে ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়ির উঠানে অনেকে লিচুগাছের চারা রোপণ করতেন। তবে গত ১০ বছরে বাণিজ্যিকভাবে লিচুর বাগান তৈরি করেছেন অনেকে। উদ্যান উন্নয়ন বিভাগ থেকে টিএস-৪ ও চায়না ১৪ প্রজাতির লিচুর চারা এনে এখন ব্যাপকভাবে বাগান তৈরি হয়েছে। এগুলো উন্নত জাত এবং বোম্বাই লিচু হিসেবে সর্বত্র পরিচিত।

তবে মেহেরপুর জেলা ও উপজেলা শহরের বাজারগুলোতে এখন পাওয়া যাচ্ছে আঁটি জাতের লিচু। বৈশাখ মাসের শেষের দিকে মেহেরপুরের বাজারে আঁটি লিচু চলে আসে। এই লিচু আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট। বিচি বড়, শ্বাসের পরিমাণ কম। টক-মিষ্টি স্বাদ।গতকাল শুক্রবার পৌর শহরের ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় চাষিদের বাঁশের ঝুড়ি ভর্তি করে লিচুর চালান পাঠাতে দেখা যায়। এসব লিচু ঢাকার কারওয়ান বাজার ও বরিশাল শহরে গিয়ে পৌঁছাবে।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

ব্যবসায়ী ও বাগানমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে এক টাকা দরে প্রতি পিচ লিচু কিনছেন পাইকারি ক্রেতারা। শুরুতে আঁটি লিচুর দখলে বাজার থাকলেও চলতি মাসের মাঝামাঝিতে বাজারে চলে আসবে বোম্বাই জাতের লিচু। এই জাতের লিচু শ্বাস মোটা ও বিচি ছোট হয়। বোম্বাই ও চায়না থ্রি জাতের লিচুর দাম আঁটি লিচুর চেয়ে বেশি হয়ে থাকে।

সদর উপজেলার হিতিমপাড়া গ্রামের লিচু বাগানমালিক তরিকুল ইসলাম বলেন, তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে লিচুবাগান করেছেন। অর্ধেক আঁটি জাতের, বাকি অংশে বোম্বাই জাতের গাছ রয়েছে। গত বছর থেকে তিন বছরের চুক্তিতে সাড়ে চার লাখ টাকায় বাগান বিক্রি দেওয়া আছে।পাইকারি লিচু ক্রেতা নয়ন শেখ বলেন, চলতি মৌসুমে সব জাতের লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। এবারে পোকার আক্রমণও কম। বৃষ্টি না হওয়ায় লিচু পচন রোগে আক্রান্ত হয়নি।

এলাকার চারটি বাগান কয়েক বছরের চুক্তিতে নেওয়া আছে। সব কটি বাগানে গাছ ভর্তি লিচু। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ১০ লাখ টাকার ব্যবসা হতে পারে।গাংনী উপজেলার সাহেব বাবুর লিচুবাগানের মালিক কদম আলী বলেন, এই বাগানে প্রতিটি গাছে টিনের বাক্স লাগানো হয়েছে। কারণ, লিচুতে রং এলেই বাদুড় ও চামচিকা লিচু নষ্ট করে ফেলে। রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে। এসব গাছ শতবর্ষী। ২২টি গাছে প্রচুর পরিমাণে লিচু ধরেছে। পচন রোগের ভয়ে থাকতে হচ্ছে। অতিরিক্ত গরম পড়লে লিচুতে পচন ধরে।

 

 

বাজার এখন মেহেরপুরের আঁটি লিচুর দখলে

 

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, মেহেরপুরের লিচু ও আম অন্য জেলা থেকে একটু বেশি স্বাদ হয়। আগে ভাগে আঁটি জাতের লিচু বাজারে চলে আসে। চলতি মৌসুমে জেলার প্রতিটি বাগানে আশানুরূপ লিচু এসেছে।সে কারণে শুরুতে আঁটি জাতের লিচুর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রয়েছে। তবে জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি লিচুর দাম বেড়ে যাবে। জেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। ৪০০ টন লিচু উৎপাদন হবে, যা বিক্রি করে ৩০ থেকে ৩২ কোটি টাকা আয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে

আরও পড়ুন:

৬ thoughts on “বাজার এখন মেহেরপুরের আঁটি লিচুর দখলে”

Leave a Comment